রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক, একুশের কণ্ঠ অনলাইন:: টানা তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠা হলো না নিউজিল্যান্ডের। ভারতের সাথে পেরে উঠলেন না কেন উইলিয়ামসনরা। বিপরীতে সবার আগে ফাইনালে উঠে গেল ভারত। বিশ্বকাপ ইতিহাসে অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়েই ফাইনালে পৌঁছাল এই প্রথমবার।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড ও স্বাগতিক ভারত।
এদিন আগে ব্যাট করে স্বাগতিকরা সংগ্রহ করে রেকর্ড ৩৯৭ রান। শতক হাঁকান বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ার। যা তাড়া করতে নেমে ডেরিয়েল মিচেলের সেঞ্চুরি সত্বেও ৪৮.৫ ওভারে ৩২৭ রানে গুটিয়ে যায় কিউইরা। ৭০ রানের বড় জয় পায় ভারত।
‘রেকর্ড প্রসবা’ ওয়াংখেড়েতে যেন রেকর্ডের বৃষ্টি ঝরালেন বিরাট কোহলি। একের পর কীর্তিতে এলোমেলো করে দিলেন পরিসংখ্যান। নাম লেখালেন ইতিহাসের পাতায় পাতায়! এক ইনিংসে এতো রেকর্ড, এর আগে কখনো দেখেছে তো ক্রিকেট বিশ্ব!
ভারত বিশ্বকাপ যেন দু’হাত ভরে দিচ্ছে কোহলিকে। রানের পাহাড় গড়ে তুলছেন তিনি। কোহলিরও যেন ক্ষুধা মিটছে না, তুলে নেন আসরের তৃতীয় সেঞ্চুরি। যা আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে নিজের ৫০তম শতক। সুবাদে হয়ে যান আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ান।
১০৬ বলে পৌঁছান এই মাইলফলকে। যা তার সব ধরনের ক্রিকেটে (আন্তর্জাতিক) ৮০তম সেঞ্চুরি। যা শচীন টেন্ডুলকারের পর সর্বোচ্চ। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপের এক আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও এখন কোহলি, ৭১১। শতকের পর কোহলি ইনিংসটা বেশিদূর টানতে পারেননি। ৪৪ ওভার শেষে ফেরেন ১১৩ বলে ১১৭ রান করে।
কোহলির পর শতক স্পর্শ করেন শ্রেয়াস আইয়ারও। তিনিও থামেন অসংখ্য রেকর্ড সঙ্গী করেই। ৭০ বলে ১০৫ করে আউট হন আসরের টানা দ্বিতীয় শতক তুলে। এদিন আইয়ার তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছান মাত্র ৬৭ বলে। যা ভারতীয়দের পক্ষে তৃতীয় দ্রুততম শতক। তবে নক আউট পর্ব বিবেচনায় ক্রিকেট ইতিহাসে যা সবচেয়ে দ্রুততম।
অবশ্য ওয়াংখেড়েতে এদিন ইতিহাস গড়ার শুরুটা করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ২৯ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে হয়ে যান বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ছক্কার মালিক। গেইলের ৪৯ ছক্কা পেছনে ফেলে রোহিতের ছক্কা সংখ্যা এখন ৫১। তাছাড়া এই রেকর্ড গড়ার পথে এক আসরের সর্বোচ্চ ২৮ ছক্কার রেকর্ডও দখলে নেন রোহিত।
সফল ছিলেন আরেক ওপেনার শুভমান গিলও। চোট পেয়ে রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ৬৫ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন গিল। রোহিতের সাথে মিলে উদ্বোধনী জুটিতে ৭১ ও কোহলির সাথে ৯৭ রানের জোট গড়েন তিনি। আর শেষ দিকে ২০ বলে ৩৯* রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন লোকেশ রাহুল।
নিউজিল্যান্ডকে জিততে হলে রেকর্ড গড়েই জিততে হতো। ডেরিয়েল মিচেলের শতকে খানিকটা সম্ভাবনা জেগেও উঠেছিল। এমনি একটা সময় মনে হচ্ছিল, হয়তো পারবে নিউজিল্যান্ড। তবে এক শামিই শেষ করে দেন সব সমীকরণ। একাই ভেঙে দেন কিউইদের ইনিংসের মেরুদণ্ড। সাত উইকেট শিকার করে রেকর্ড বুক তছনছ করে দেন মোহাম্মদ শামি।
একটা সময় কেন উইলিয়ামসনের ৬৯ ও মিচেলের শতকে ভর করে ৪২.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ২৯৫ রান তুলে ফেলে নিউজিল্যান্ড। তবে বুমরাহ গ্লেন ফিলিপসকে ফেরাতেই ভেঙে যায় কিইউদের প্রতিরোধ। শামি ফেরান বিশ্বকাপে দ্বিতীয় শতক তুলে নেয়া মিচেলকে। ১১৯ বলে ১৩৪ রানে আউট হন মিচেল।
সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের টপ পাঁচ ব্যাটসম্যানের সবাইকেও ফেরান শামি। চলতি বিশ্বকাপে তৃতীয়বারের মতো তুলে নেন ৫ উইকেট। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয়। যা আবার ভারতীয় বোলারদের মাঝে সেরা ওয়ানডে বোলিং স্পেল। বিশ্বকাপের ইতিহাসে পঞ্চম সেরা।